শাপলা চত্তরে খুনি হাসিনার “গণহত্যা”

আজ শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩ ইং – এই ৫ই মে তারিখটি বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে একটি গণহত্যা দিবস নামে পরিচিত। ২০১৩ সালের এই দিনে খুনি শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের দোসর পুলিশ, রেব ও বিজিবি (সাবেক বিডিআর) যৌথভাবে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে। মধ্যরাতের অন্ধকারে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যায় মেতে উঠেছিল ফ্যাসিবাদী আওয়ামী মাফিয়া সরকার। এই গণহত্যায় যৌথবাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী গুণ্ডা বাহিনীও যোগ দিয়েছিল অস্ত্র হাতে।

এই গণহত্যার দিনটি ফ্যাসিবাদি বিরোধী লড়াইয়ের এক বিশেষ মাইল ফলক হিসাবেও চিহ্নিত হয়ে আছে ইতিহাসে। বাংলাদেশে ধর্মপ্রাণ জনগনের লড়াইয়ের ফলেই তসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়েছিল আওয়ামী লীগ ও ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গড়ে উঠা কথিত গণজাগরণ মঞ্চ। জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিরোধী এ মঞ্চ থেকেই দেশের ৯০শতাংশ মানুষের ধর্মীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চলানো হয়েছিল।

৫মে’র গণহত্যায় কত মানুষ নিহত হয়েছিলেন তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান এখনো নেই। আমার রাজনৈতিক আদর্শের দল অর্থাৎ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপির বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ ও দেশ বরণ্য বুদ্ধিজীবীদের মতে এই দিনে শহীদ হয়েছেন প্রায় ৪০০ জন মানুষ। ইতিহাস একদিন সেই রাতে শাহাদাতবরণকারী রাজনীতিবিদ, আলেম, মাদ্রাসা ছাত্র ও সাধারণ নাগরিকদের নামের তালিকা অবশ্যই খুঁজে বের করবে। এই গণহত্যার বিচারও একদিন হবে দেশের মাটিতেই।

ওই রাতের নৃশংস হামলায় যারা আহত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন তাদেরকেও পরবর্তীতে পুলিশি জুলুমের শিকার হতে হয়েছিল। পুলিশ-রেব-বিজিবি’র সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর হামলায় আহতদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছিল কুখ্যাত খুনি শেখ হাসিনা। আহত অবস্থায় অনেক কে গ্রেফতার করে রিমাণ্ডেও নেওয়া হয়। হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন মহাসচিব আল্লামা জোনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সমাবেশ থেকেই। রিমাণ্ডে নিয়ে অমানসিক নির্যাতন করা হয়েছিল তাঁকে। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি আর সুস্থ হতে পারেননি।

১৩ দফা দাবীতে হেফজতে ইসলামের ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি ছিল ৫ মে ২০১৩। পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি সফল করতে সকাল থেকেই ঢাকা প্রবেশের বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হয়েছিলেন লাখো জনতা। সরকার সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ করে দিয়েও ঢাকার প্রবেশ মুখ গুলোর নির্ধারিত পয়েন্টে মানুষের ঢল ঠেকাতে পারেনি। ঢাকা ঘেরাও সফল করে বিকালে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে জনতা রওয়ানা দেয় মতিঝিলের শাপলা চত্তরের দিকে। সায়েদাবাদ, গাবতলী, মহাখালি, কেরানিগঞ্জসহ ঢাকায় প্রবেশের পয়েন্ট থেকে পায়ে হেটে মতিঝিলে আসেন জনতা। চার দিক থেকে আসা মানুষের ঢলে বিকালে পুরো ঢাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছিল। এক পর্যায়ে সন্ধ্যার আগেই শাপলা চত্বরের চারপাশের রাস্তা জনসমূদ্রে রূপ নেয়। মানুষের স্বত:স্ফুর্ত অংশ গ্রহন দেখে দিশেহারা হয়ে পড়ে ফ্যাসিবাদি শেখ হাসিনার সরকার। এতে শেখ হাসিনার অনুগত রাষ্ট্রীয় খুনিরা ক্ষমতায় টিকে থাকতে গুপ্তহত্যার ছক তৈরি করে।

-সামছুল আলম জাবেদ
রাজনৈতিক কর্মী

Scroll to Top